সতর্ক থাকতে হবে, চক্রান্ত করে কেউ যেন বিপথে না নেয়: ফখরুল

গতকাল গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানীর উপর হামলা ও সংগঠনটির ক্রীড়া সম্পাদক দিদারকে শহীদ করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখনো হায়নারা (আওয়ামী লীগ) লুকিয়ে আছে, যেকোন সময় আক্রমণ করবে। হায়নাদের...

সতর্ক থাকতে হবে, চক্রান্ত করে কেউ যেন বিপথে না নেয়: ফখরুল

সতর্ক থাকতে হবে, চক্রান্ত করে কেউ যেন বিপথে না নেয়: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানীর উপর হামলা ও সংগঠনটির ক্রীড়া সম্পাদক দিদারকে শহীদ করা হয়েছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এখনো হায়নারা (আওয়ামী লীগ) লুকিয়ে আছে, যেকোন সময় আক্রমণ করবে। হায়নাদের আক্রমণকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।

শনিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্র জনতার আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। এই স্মরণ সভার আয়োজন করে বিএনপি।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের অভিবাদন জানিয়ে ফখরুল বলেন, আজকে আমরা স্বাধীন হয়েছি, হয়তবা স্বাধীন হয়েছি কিন্তু চারদিকে নাগিনীদের বিষাক্ত নিঃশ্বাস। তারা তাদের চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে বিভিন্নভাবে আমাদের মাঝে বিভেদ তৈরির জন্য পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। নেতাকর্মীদের কোনভাবেই ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে পা না দেয়ার আহবান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

গণঅভ্যুত্থান ও আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে আমরা একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পেয়েছি, এই সরকারের কাছেই দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা আকাশচুম্বী এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আশা, তারা একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে সত্যিকার অর্থে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠিত করতে পারি। ছাত্রজনতার আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য ১৬ বছর ধরে যারা পঙ্গু ও নিহত হয়েছেন তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, সরকার প্রধানের কাছে এমন দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।

১৬ বছর ধরে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনীত দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে সকল মামলা হয়েছে তা অতি দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে এমন দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির কাছে অঙ্গীকার করতে চাই, সত্যিকার অর্থে প্রকৃত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে দেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমরা সকলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাব। তবে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে চক্রান্তের মধ্য দিয়ে কেউ যেন আমাদেরকে বিপথে না নিয়ে যায়। কোন মতেই আমরা যেন আমাদের লক্ষ্য ও পথ না হারাই।

স্মরণ সভায় বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আওয়ামী লীগ দাঁড়ানোর জন্যও একটা মুরগির খোপ পায়নি। আগামী ১০০ বছরও ছাত্র-জনতার কাছে তারা আস্থা পাবে না। ছাত্র-জনতার হত্যাসহ গত ১৫ বছরের গুম-খুন ও নির্যাতনের বিচার হলে আওয়ামী লীগ ‘কবরলীগে’ পরিণত হবে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদদের রক্তের সঙ্গে কেউ যেন বেইমানি না করে তার জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।

সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য তাবিত আউয়াল, ইশরাক হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।

এরআগে দুপুর আড়াইটা থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে পূর্ব ঘোষিত সমাবেশে অংশ নিতে শহীদ মিনারে সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সমাবেশে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিতে ভিজে নেতাকর্মীরা কর্মসূচির প্রাঙ্গণে অবস্থান করেন। এসময় তারা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে সমাবেশ প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তোলেন। এরআগে কর্মসূচিতে অংশ নিতে দুপুর ব্যানার ও ফেস্টুন সহকারে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জড়ো হতে শুরু করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। সমাবেশের শুরুতে আন্দোলন শহীদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা। আন্দোলন দিনগুলোর ভয়াবহ হামলার চিত্র মঞ্চ নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরেন অভিনয় শিল্পীরা। সবশেষে দলীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে স্মরণসভার সমাপ্তি হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এএইচ/এমপি

© Bangladesh Journal